কাজের চাপে কাহিল? কাজের অগ্রাধিকার নির্ধারণ করবেন কিভাবে?

সর্বোচ্চ দক্ষতা অর্জনে কাজের অগ্রাধিকার নির্ধারণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণা থেকে জানা যায়, সঠিক পরিকল্পনা উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও মানসিক চাপ কমাতে সহায়ক। এই ব্লগে আলোচনা করা হয়েছে একাডেমিক গবেষণার আলোকে কাজের অগ্রাধিকার নির্ধারণের কৌশল।

BLOG

Md Emran Ahmmed

12/11/20241 মিনিট পড়ুন

man in bluee ssweater
man in bluee ssweater

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কাজের চাপ এবং সময়ের সীমাবদ্ধতা প্রায়শই আমাদের লক্ষ্যপূরণের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তবে, একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, সঠিক অগ্রাধিকার নির্ধারণ আমাদের কর্মজীবন এবং ব্যক্তিজীবনের দক্ষতা উন্নত করতে সাহায্য করে। হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ (Duhigg, 2016) এর মতে, সময়ের সঠিক ব্যবস্থাপনা ব্যক্তির উৎপাদনশীলতা ২৫-৩০% পর্যন্ত বাড়াতে পারে।

কেন কাজের অগ্রাধিকার নির্ধারণ গুরুত্বপূর্ণ?

. উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি:

গবেষণায় দেখা গেছে যে সময়ের সঠিক ব্যবহার এবং অগ্রাধিকার নির্ধারণ উৎপাদনশীলতায় তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলে। MIT Sloan Management Review (Blount & Leinwand, 2020) উল্লেখ করেছে, যেসব কর্মীরা সুনির্দিষ্ট সময় ব্যবস্থাপনার কৌশল অনুসরণ করেন, তারা অন্যদের তুলনায় গুণ বেশি কার্যকর।

. মানসিক চাপ কমানো:

কাজের তালিকা বিশৃঙ্খল হলে তা মানসিক চাপ বৃদ্ধি করে। American Psychological Association (APA, 2020) এর একটি গবেষণা অনুযায়ী, পরিকল্পিত কাজের রুটিন মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।

. সাফল্যের সম্ভাবনা বাড়ানো:

সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেওয়া কর্মজীবনে সফলতার প্রধান নিয়ামক। হিউম্যান রিসোর্স স্টাডিজ (Forbes, 2018) এর একটি সমীক্ষায় বলা হয়েছে, সঠিক অগ্রাধিকার নির্ধারণ ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের সাফল্যের হার ৪০% পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে।

কীভাবে কাজের অগ্রাধিকার নির্ধারণ করবেন?

. কাজের তালিকা তৈরি করুন:

গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে কাজের সুনির্দিষ্ট তালিকা প্রস্তুত করলে তা আপনার মানসিক চাপ ২০% পর্যন্ত কমিয়ে দেয় (GTD Method, Allen, 2001) প্রতিদিনের কাজগুলো একটি নোটবুকে বা অ্যাপে লিখে রাখুন।

. 'ইমপর্ট্যান্ট বনাম আরজেন্ট' ম্যাট্রিক্স ব্যবহার করুন:

আইজেনহাওয়ার ম্যাট্রিক্স, যা Stephen Covey (1989) এর বিখ্যাত বই The 7 Habits of Highly Effective People উল্লেখিত, কাজের অগ্রাধিকার নির্ধারণে সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতিগুলোর একটি।
এই ম্যাট্রিক্সে কাজগুলোকে চার ভাগে ভাগ করা হয়:

  • জরুরি এবং গুরুত্বপূর্ণ

  • গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু জরুরি নয়

  • জরুরি কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ নয়

  • না জরুরি, না গুরুত্বপূর্ণ

. সময়সীমা নির্ধারণ করুন:

গবেষণা বলছে, নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করলে কাজের গতি বৃদ্ধি পায়। Parkinson's Law অনুসারে, কাজের জন্য নির্ধারিত সময় যত কম হবে, কাজ তত দ্রুত সম্পন্ন হবে।

. মাল্টিটাস্কিং এড়িয়ে চলুন:

Stanford University (Ophir et al., 2009) এর একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মাল্টিটাস্কিং উৎপাদনশীলতা ৪০% পর্যন্ত কমিয়ে দেয়। তাই এক সময়ে একটি কাজ সম্পন্ন করুন।

. নিজেকে পুরস্কৃত করুন:

Behavioral Economics (Thaler & Sunstein, 2008) এর একটি সমীক্ষা অনুসারে, কাজের পর পুরস্কার দেওয়া কর্মীদের মধ্যে উৎপাদনশীলতার হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়।

প্রযুক্তির সহায়তা নিন

প্রযুক্তির সহায়তায় বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ ব্যাবহার করে আপনার কাজ গুছিয়ে রাখতে এবং সময়মতো শেষ করতে পারবেন। Technological Productivity Studies (McKinsey, 2022) অনুযায়ী, ধরনের অ্যাপ ব্যবহারের ফলে কাজের দক্ষতা ১৫-২০% পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।

শেষ কথা

কাজের অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা কেবল ব্যক্তিগত দক্ষতা নয়; এটি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সফলতার সোপান। গবেষণার আলোকে এটি প্রমাণিত যে সঠিক পরিকল্পনা এবং কৌশল জীবনকে সহজ এবং ফলপ্রসূ করতে পারে। আজই আপনার কাজের তালিকা তৈরি করুন এবং সফলতার পথে এগিয়ে যান। মনে রাখবেন, সময়ের সঠিক ব্যবহারই জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ।

[বিনীত অনুরোধঃ যদি এই ব্লগটি উপকারী মনে হয়, তবে এটি শেয়ার করে অন্যদের শেখার জানার সুযোগ দিন।]

আরও পড়ুনঃ The Role of Determiners in English Grammar